• সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ বৈশাখ ১৪২৯

জাতীয়

লুণ্ঠনে ঝাঁঝরা স্বাস্থ্য খাত

  • ''
  • প্রকাশিত ১৬ এপ্রিল ২০২৪

এম এ বাবর:

চিকিৎসাসেবার সাংবিধানিক ও মৌলিক অধিকার থেকে বঞ্চিত দেশের বেশির ভাগ মানুষ। বস্তুত এখন এমন পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে যে, চিকিৎসা না পাওয়ার আশঙ্কায় গুরুতর অসুস্থ ছাড়া কোনো মানুষ সহজে হাসপাতালমুখী হচ্ছে না। স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে স্বাস্থ্য খাতে অবকাঠামোর বেশ উন্নতি হয়েছে। কিন্তু স্বাস্থ্য খাতে চিকিৎসাসেবার শৃঙ্খলা এখনো ফেরেনি।

সরকারি হাসপাতালের দায়িত্বশীলরা চিকিৎসা সেবার সব খাতেই লুণ্ঠন করে ঝাঁঝরা করে দিচ্ছে। আর বেসরকারি হাসপাতালে রোগীর সেবায় পর্যাপ্ত মনোযোগ দেওয়া হয় না। নিজস্ব বাণিজ্য নিয়ে ব্যস্ত থাকেন চিকিৎসকসহ সংশ্লিষ্ট হাসপাতালের দায়িত্বশীলরা। তারা রোগীর আর্থিক স্বচ্ছলতার দিকে গুরুত্ব না দিয়ে মেডিকেল চেকাপের জন্য রোগীকে নির্দিষ্ট রোগ নিরীক্ষা কেন্দ্রে পাঠানো, ব্যবস্থাপত্রে অপ্রয়োজনীয় ওষুধের পরামর্শ ও কোম্পানির কাছ থেকে কমিশন গ্রহণ না অভিযোগ পাওয়া যাচ্ছে।

সরকারি হাসপাতালগুলোতে চিকিৎসাসামগ্রী ক্রয় খাতে বরাদ্দের টাকা থেকে বছরে শত-শত টাকার দুর্নীতি হয়। বাদ যায়নি একমাত্র রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন ওষুধ প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠান এসেনশিয়াল ড্রাগস কোম্পানিও। এখানে শুধু এক অর্থবছরেই ৩২ কোটি টাকার অনিয়ম হয়েছে।

বিভিন্ন সরকারি স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানে অনিয়মের কারণে সরকারের ৪৫৯ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে। ৪টি আলাদা কমপ্লায়েন্স নিরীক্ষা প্রতিবেদনে এ তথ্য পাওয়া গেছে। ২০১৪-১৫ থেকে ২০১৮-১৯ অর্থবছরের জন্য প্রস্তুত করা বাংলাদেশের মহাহিসাব নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রকের (সিএজি) প্রতিবেদন অনুযায়ী, কেন্দ্রীয় ঔষধাগারের (সিএমএসডি) বাজেট ব্যয়ে অনিয়মের কারণে এই ক্ষতি হয়েছে। এই সময়ে মোট বরাদ্দ ৩ হাজার ৯৫২ কোটি টাকার ১১ দশমিক ৬ শতাংশ, অর্থাৎ ৪৫৮ কোটি ৮০ লাখ টাকার অনিয়ম হয়েছে। দীর্ঘ সময় তদন্তের পর সম্প্রতি সিএজি এ প্রতিবেদনটি প্রকাশ করে।

এর আগে ২০১৬-১৭ অর্থবছরে যথাযথ প্রটোকল অনুসরণ না করে সিএমএসডি ৪টি মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে চিকিৎসা সরঞ্জাম সরবরাহ করায় সরকারের ১৫ কোটি ৮ লাখ টাকা লোকসান হয়েছে। প্রতিবেদনের ভাষ্য, প্রকৃতপক্ষে, এই সরঞ্জামগুলো অব্যবহৃত রয়ে গেছে কিংবা অকেজো হয়ে পড়েছে। যার ফলে উল্লেখযোগ্য আর্থিক ক্ষতি হয়েছে। নিরীক্ষা করা প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল, রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল এবং জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউট ও হাসপাতাল সিএমএসডি ও সরবরাহকারীদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছে বলে জানিয়েছে। যে মেডিকেল সরঞ্জামগুলো নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে, সেগুলো শিগগিরই স্থাপন করা হবে বলেও জানিয়েছে তারা।

খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল বলছে, সিএমএসডি তাদের সম্মতি ছাড়াই এসব পণ্য সরবরাহ করেছে।

‘সিএমএসডিই এই সরঞ্জামগুলো হাসপাতালে পাঠিয়েছে’ উল্লেখ করে প্রতিবেদনে এই ধরনের অপচয়ের জন্য দায়ীদের শনাক্ত করতে আরও তদন্তের আহ্বান জানানো হয়েছে। ওই বছর ৮টি মেডিকেল কলেজ, একটি সিভিল সার্জন কার্যালয়, একটি জেলা হাসপাতাল এবং ২টি ইনস্টিটিউট ও হাসপাতাল একই ধরনের পণ্যের জন্য জনস্বাস্থ্য ইনস্টিটিউট ও এসেনশিয়াল ড্রাগ কোম্পানির দেওয়া দামের চেয়ে ১৮ গুণ বেশি দামে চিকিৎসা ও সার্জিক্যাল সরঞ্জাম সংগ্রহ করেছিল। এর ফলে সরকারের লোকসান হয়েছে ১ কোটি ৬৩ লাখ টাকা।

সিএমএসডির কাছে সিএজি অনিয়মের বিষয়ে জানতে চাইলে তারা জানিয়েছে, জনস্বাস্থ্য ইনস্টিটিউট ও এসেনশিয়াল ড্রাগ কোম্পানি তাদের পণ্যের স্পেসিফিকেশন পূরণ করতে না পারায় তারা টেন্ডার প্রক্রিয়ার মাধ্যমে পণ্য সংগ্রহ করেছে। তবে, এই ব্যাখ্যা গ্রহণ করেননি নিরীক্ষকরা। ২০১১ সালের ২ জুন ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে সিটি স্ক্যান মেশিন স্থাপন করা হয়। মেশিনটির ওয়ারেন্টি পিরিয়ড ছিল ৫ বছর। তবে ওয়ারেন্টির মেয়াদ শেষ হওয়ার আগেই এটি অকার্যকর হয়ে পড়ে। ওয়ারেন্টি প্রয়োগের পরিবর্তে ঢামেক কর্তৃপক্ষ মেশিনটি মেরামতের জন্য অন্য একটি কোম্পানিকে নিযুক্ত করার সিদ্ধান্ত নেয়, যার ব্যয় ১ কোটি ১৬ লাখ টাকা।

নিরীক্ষা প্রতিবেদনে অন্য কোনো কোম্পানিকে নিয়োগ দেওয়ার সিদ্ধান্তকে ‘গুরুতর আর্থিক অনিয়ম’ হিসেবে আখ্যায়িত করে বলা হয়, এর মাধ্যমে সরকারি অর্থ আত্মসাৎ করা হয়েছে। প্রতিবেদনে এই অসদাচরণের জন্য দায়ী ব্যক্তিদের চিহ্নিত করার জন্য একটি পূর্ণাঙ্গ তদন্ত করার সুপারিশ করা হয়েছে।

২০১৮-১৯ অর্থবছরে হাসপাতাল ও সিভিল সার্জন কার্যালয়সহ ৪৪টি জনস্বাস্থ্য প্রতিষ্ঠানে অনিয়মের কারণে সরকারের প্রায় ২৬৬ কোটি টাকা লোকসান হয়েছে। অনিয়মের মধ্যে রয়েছে সরকারি তহবিলের অপচয়, অব্যবহৃত ক্রয়কৃত যন্ত্রপাতির কারণে স্বাস্থ্যসেবা সরবরাহে ব্যাঘাত এবং প্রচলিত বাজার দরের চেয়ে বেশি দামে চিকিৎসা ও সার্জিক্যাল সরঞ্জাম ক্রয়।

ওই বছর সিএমএসডি ৫টি মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও ৩টি জেনারেল হাসপাতালে অতিরিক্ত চিকিৎসা সরঞ্জাম সরবরাহ করায় সরকারের প্রায় ২৫ কোটি ৫৩ লাখ টাকা লোকসান হয়।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সংশ্লিষ্ট হাসপাতালের প্রয়োজন, সেখান থেকে চাহিদাপত্র, প্রয়োজনীয় মানবসম্পদ কিংবা সেখানে অবকাঠামো না থাকা সত্ত্বেও সরঞ্জামগুলো সরবরাহ করা হয়েছিল। আবার অনেক সরঞ্জাম হাসপাতালে ইতোমধ্যে ছিল। নিরীক্ষকরা এ বিষয়ে ঢামেকসহ হাসপাতালগুলোর কাছে ব্যাখ্যা চেয়েছেন। ঢামেক কর্তৃপক্ষ জানায়, কার্ডিয়াক সার্জারি বিভাগের বিশেষজ্ঞরা সরবরাহ করা ১৭টি ভেন্টিলেটরের কার্যকারিতা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করে সেগুলোর ব্যবহার বন্ধ করে দেন। এই নিরীক্ষা প্রতিবেদনেও সিএমএসডির বিরুদ্ধে এই হাসপাতালগুলোতে সরঞ্জাম পাঠিয়ে দেওয়ার অভিযোগ আনা হয়েছে।

অন্যদিকে রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন ওষুধ প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান এসেনশিয়াল ড্রাগস কোম্পানি লিমিটেড (ইডিসিএল) ২০১৩ সালের ২৬ জুন একটি ওষুধ উৎপাদন যন্ত্র কেনে। কিন্তু পরবর্তী ৭ বছরে যন্ত্রটি ব্যবহার তো দূরের কথা, খোলাই হয়নি। এরপর যখন যন্ত্রটি খোলা হয়, তখন দেখা যায় তা প্রায় অকেজো হয়ে পড়েছে। রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন ওষুধ কোম্পানির এই অবহেলার জন্য ২০১৯-২০ অর্থবছরে প্রায় ৩ কোটি ৮২ লাখ টাকা লোকসান গুনতে হয়েছে। সিএজি তাদের প্রতিবেদনে একে ‘গুরুতর অবহেলা’ হিসেবে উল্লেখ করেছে।

সিএজির নিরীক্ষকরা এ বিষয়ে জানতে চাইলে ইডিসিএল কর্তৃপক্ষ দাবি করে, ওই মেশিনটির পরীক্ষামূলক কাজ চলছিল এবং মেশিনটির আউটপুট ছিল ৯৫ শতাংশ। তবে কোনো ধরনের তথ্য-প্রমাণ দেখাতে না পারায় ইডিসিএলের এই দাবি গ্রহণ করেনি সিএজি নিরীক্ষকরা।

এ ঘটনায় শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিতে ২০২১ সালের ১৯ সেপ্টেম্বর স্বাস্থ্য বিভাগের সচিবকে চিঠি দিয়েছিল সিএজির নিরীক্ষকরা। তবে গত ২ ফেব্রুয়ারি ’২৪ পর্যন্ত চিঠির কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি।

নিরীক্ষকরা আরও ৬টি আর্থিক অনিয়মের ঘটনা খুঁজে পেয়েছে, যার ফলে কোম্পানিটি শুধু ২০১৯-২০ অর্থবছরেই প্রায় ৩২ কোটি টাকার ক্ষতি করেছে। অনিয়মগুলোর মধ্যে একটি হলো মহামারিকালে ফুসফুসের সংক্রমণের চিকিৎসার জন্য ব্যবহৃত অ্যান্টিবায়োটিক মেরোপেনেম তৈরিতে ব্যর্থতা। তখন এই ওষুধটির ব্যাপক চাহিদা ছিল।

ইডিসিএল কর্তৃপক্ষ কোনো যুক্তিসঙ্গত কারণ ছাড়াই কাঁচামাল সংগ্রহের দরপত্র ৩ বার বাতিল করে এবং যেসব সরকারি হাসপাতালগুলো অ্যান্টিবায়োটিক চেয়েছিল, তাদেরকে স্থানীয় ওষুধ কোম্পানি থেকে তা সংগ্রহ করার পরামর্শ দেয়।

প্রতিবেদনে বলা হয়, ১৯৬২ সালে প্রতিষ্ঠিত কোম্পানিটি যদি দ্বিতীয় দরপত্রের মাধ্যমে কাঁচামাল আমদানি করে ওষুধ তৈরি করত, তাহলে তারা ৪ কোটি ৪৭ লাখ টাকা লাভ করত। অবহেলার বিষয়ে জানতে চাইলে ইডিসিএল কর্তৃপক্ষ সিএজিকে জানায়, আন্তর্জাতিক বাজারে প্রচলিত কাঁচামালের উদ্ধৃত দরের চেয়ে দরপত্রের মূল্য তুলনামূলকভাবে অনেক বেশি বলে টেন্ডার প্রক্রিয়া বাতিল করেছে ক্রয় কমিটি। এতে কোম্পানিটির সাশ্রয় হয়েছে প্রায় ১ কোটি ৫৩ লাখ টাকা।

তবে সিএজি বলেছে, ইডিসিএল কর্তৃপক্ষের এই ব্যাখ্যাটি প্রথম দরপত্র বাতিলের ক্ষেত্রে গ্রহণযোগ্য। কিন্তু এরপরের ২ বারের জন্য নয়। প্রতিবেদনে দেশে জনস্বাস্থ্য সংকটের সময় একটি গুরুত্বপূর্ণ ওষুধের উৎপাদন না করার জন্য দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানানো হয়।

এ ছাড়াও, ইডিসিএলের গোপালগঞ্জ ফার্মাসিউটিক্যাল ফ্যাক্টরি প্ল্যান্ট-৩ এর জন্য কেনা আরও একটি সরঞ্জাম আড়াই বছর ধরে স্থাপন না করে ও অব্যবহৃত রেখে প্রায় ১৮ কোটি ৩৮ লাখ টাকার ক্ষতি করেছে। এ বিষয়ে জানতে চাইলে তারা মহামারির কারণে দেরি হয়েছে বলে জবাব দেয়। তবে অডিট দল তাদের এই অজুহাতকে ‘অযৌক্তিক’ বলে উল্লেখ করেছে।

নিরীক্ষা প্রতিবেদনে আরও দেখা গেছে, কোভিড-১৯ রোগীদের চিকিৎসার সঙ্গে সরাসরি জড়িত কর্মচারীদের জন্য চালু করা বিশেষ ভাতা এমন কর্মচারীদের দেওয়া, যারা এর সঙ্গে ছিলেন না। এতে কোম্পানিটি ১ কোটি ৫৮ লাখ টাকা ক্ষতি করেছে।

টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামন বলেন, আমাদের বিভিন্ন খাতে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হয়েছে। স্বাস্থ্য খাতেও অবকাঠামোর উন্নতি হয়েছে। কিন্তু স্বাস্থ্য খাতে চিকিৎসাসেবার শৃঙ্খলা ফেরাতে পারিনি। চিকিৎসকের ডায়াগনস্টিক ও ওষুধ বাণিজ্যের কারণে রোগীরা প্রতিনিয়তই হয়রানির শিকার হচ্ছে। ভুল চিকিৎসায় রোগী মৃত্যুবরণও করেছে। বেসরকারি হাসপাতাল ও ক্লিনিক ইচ্ছামতো রোগীর কাছ থেকে টাকা আদায় করছে। এক্ষেত্রে বরাবরই প্রশ্ন থেকেছে স্বাস্থ্য ও পরিকল্পনা মন্ত্রণালয় এবং স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ভূমিকা নিয়ে।

তিনি আরো বলেন, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের বিভিন্ন কার্যালয়ে কিছুসংখ্যক কর্মকর্তা-কর্মচারীর যোগসাজশে দুর্নীতির শক্তিশালী বলয় তৈরি হয়েছে। ‘শক্তিশালী’ এ সিন্ডিকেটের মাধ্যমে সরকারি মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে ওষুধ, সরঞ্জাম ও যন্ত্রপাতি ক্রয়ে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের সমন্বয়ে ‘সিন্ডিকেট’ গঠন করে স্বাস্থ্য খাতে জনসাধারণের জন্য বরাদ্দ সরকারি বাজেটের একটি বড় অংশ হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ রয়েছে। ফলে জনগণ তাদের প্রত্যাশিত স্বাস্থ্যসেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে, যা গণমাধ্যমের বিভিন্ন প্রতিবেদনে ওঠে এসেছে।

তাই স্বাস্থ্য খাতের লুণ্ঠন বন্ধ করা ও সেবা খাত হিসেবে শৃঙ্খলা আরোপ করা এবং সেবামূলক স্বাস্থ্য খাত গড়ে তুলতে পর্যাপ্ত বিনিয়োগ করতে হবে। একই সঙ্গে স্বাস্থ্য খাতের অনিয়ম দুর্নীতি বন্ধে বিশেষ আইন করে তা বাস্তবায়ন করতে হবে।

স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী সামন্ত লাল সেন বলেন, সংসদ সদস্যরা পার সঙ্গে থাকলে স্বাস্থ্য খাতের অনিয়ম-দুর্নীতি অবশ্যই দূর করতে পারব। তবে এ জন্য কিছুটা সময়ের প্রয়োজন। আমি একটা কথা সব সময় স্পষ্টভাবে বলি, মানুষের জীবন কিন্তু একটাই। এ জীবন ভুল চিকিৎসায় চলে গেলে সে জীবন আর ফিরে আসবে না। আর এ ভুল চিকিৎসার দায় রাষ্ট্র যেমন এড়িয়ে যেতে পারে না, তেমন স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরাও এড়িয়ে যেতে পারে না।

মন্ত্রী বলেন, আমি সারাজীবন কোনো অনিয়ম, দুর্নীতি, অবহেলা করিনি। সুতরাং, স্বাস্থ্য খাতে এগুলো কেউ করলে আমি সহ্যও করব না। প্রান্তিক পর্যায়ে স্বাস্থ্যসেবা আরও উন্নত করাই আমার প্রধান লক্ষ্য। এটি করতে পারলে শহরে রোগীর চাপ কমে আসবে। সারাজীবন অন্যায়-দুর্নীতির বিরুদ্ধে ছিলাম। এখনো আছি। কোনো চিকিৎসকের অবহেলায় কোনো রোগীর মৃত্যু তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কী কারণে রোগীর মৃত্যু হলো সেটিও তদন্তের ব্যাপার। তবে হ্যাঁ, অনেক ক্লিনিক আছে, যাদের লাইসেন্স নেই, অনুমতি নেই এবং যেগুলোর অবকাঠামো ঠিক নেই, সেসব ক্লিনিক বন্ধ করতে হবে। তাই সংসদ সদস্যদের কাছে আমার সবিনয় অনুরোধ তারা যেন প্রত্যেকের এলাকায় যেসব ক্লিনিক, ডায়াগনস্টিক স্টোর আছে, সেগুলো ভিজিট করুন। ভিজিট করে দেখুন, তাদের যা যা সুবিধা সেগুলো আছে কি না, লাইসেন্স আছে কি না। চিকিৎসা নিতে গিয়ে মানুষ হয়রানি বা প্রতারিত হচ্ছে কি-না, তা পর্যপেক্ষণ করতে হবে।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads